জামায়াত থেকে আতাউর রহমান স্থায়ীভাবে বহিষ্কার
রাজশাহী মহানগর জামায়াতের আমির ও সাবেক কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির আতাউর রহমানকে দল থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করেছে জামায়াতের মজলিসে শুরা। সারা দেশে অঞ্চলভেদে অনুষ্ঠিত মজলিসে শুরার বৈঠকগুলো থেকে তাকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের অনুমোদন নেয়া হয় বলে দলটির নির্ভরযোগ্য একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরার সদস্য ও ফেনী জেলা আমির একে এম শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, আমি শুনেছি। তিনি অব্যাহতিপত্র দিয়েছিলেন, সেটি অনুমোদন করা হয়েছে। কেন্দ্র থেকে আতাউর রহমানের বহিষ্কারের বিষয়ে লিখিত ব্যাখ্যা চাইলে সারাদেশের শুরার সদস্যরা তা অনুমোদন করেন। আতাউর রহমানের মেয়ের জামাতা হচ্ছেন জামায়াতের ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সেক্রেটারি ও কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ। মজলিসে শুরার একটি সূত্রের দাবি, আতাউর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ হচ্ছে একজন নারীকে কেন্দ্র করে। গত ৪ জুলাই সকালে তার দ্বিতীয় স্ত্রী রাশেদা বেগম রাজশাহীর মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে হাজির হয়ে মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে আসামির বিরুদ্ধে সমন জারি করেছেন। ওই মামলা নিয়ে আতাউর রহমান প্রকাশ্যে কথা বলার পর তাকে জামায়াতের শীর্ষ নেতৃত্ব থেকে চুপ থাকতে বলা হয়। যদিও তিনি এ বিষয়ে দায়িত্বশীলদের পরামর্শ না শুনে মামলার বিষয়ে নানা উদ্যোগ নেওয়ার চেষ্টা করেন। এরপরই বিষয়টিকে সিরিয়াসভাবে নেন জামায়াতের নীতি-নির্ধারকরা। সাংগঠনিকভাবে নীতি ও নৈতিকতা নিয়ে কঠোর অবস্থান থাকায় তাকে শেষ পর্যন্ত দল থেকে বাদই দেওয়া হলো। মজলিসে শুরার আরেকটি সূত্র জানায়, আতাউর রহমান জামায়াতের শীর্ষ কয়েকজন নেতা ও দলের অর্থের আয়-ব্যয় সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে উচ্চকিত থাকায় দল থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে দলের মধ্যে চাপা ক্ষোভও তৈরি হয়েছে। তবে দলীয় কঠোর নির্দেশনার কারণে দলে দৃশ্যত কোনও আলোচনা নেই। আতাউর রহমানের বহিষ্কারে জামায়াতে কী ধরনের প্রভাব পড়তে পারে, এমন প্রশ্নে মজলিসে শুরার একাধিক সদস্য জানান, আতাউর রহমান জামায়াতের পুরনো দায়িত্বশীল। পরীক্ষিত নেতা। পুরো রাজশাহীতে তার প্রভাব অনস্বীকার্য। এক্ষেত্রে নেতাকর্মীদের মধ্যে প্রভাব পড়া স্বাভাবিক। তবে অনেকটা নীরবে আতাউর রহমান পর্বের ইতি ঘটাতে চাইছে জামায়াত। এর আগে এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে কেন্দ্রীয় নায়েবে আমিরের পদ থেকে আতাউর রহমানকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করায় তার বিরুদ্ধে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।